মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৫

এক্সাম মেকানিজম

    এসএসসি ' র আগের সিলেবাসে এক্সাম ফিটনেস নামে একটা লেসন ছিল।কিভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয় বা পরীক্ষায় ভালো করার উপায় কি সেই সম্পর্কেই এটা ছিল।যুগের চাহিদা অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এক্সাম মেকানিজম নামেও একটা লেসন/ ইউনিট রাখার জোর দাবী জানাচ্ছি।এখানে কিভাবে পরীক্ষার ফলাফল হাইব্রিড বানানো যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত থাকবে বলে আশা করছি।
    বেশ অনেকদিন আগের কথা।এইচ এস সি পরীক্ষার রেজাল্টে আশেপাশের চোর- বাটপারদের যেইরকম নাচ দেখেছিলাম তাতে নিজেকে আটকাতে না পেরে লিখেছিলাম - এইসব পরীক্ষার্থীরা না হয় ছোট,তাই বলে তাদের অভিভাবকদের কি একটুও লজ্জা লাগে না ???
    ইতোমধ্যে ২ টি বিষয়ের এইচএসসি পরীক্ষা শেষ।কানে যেই পরিমান কথা এসেছে তাতে বুঝতে কষ্ট হয় না যে আরেকটা "হাইব্রিড ড্যান্স" এর অপেক্ষা করতে হবে।লোকে বলে শোনা কোথায় কান দিতে নেই।কিন্তু যারা এই " সহযোগিতা" পাচ্ছে তারাই যদি শিকার করে তাহলে কি আর বিশ্বাস না করার উপায় আছে?
    এই কিছুদিন আগেও আমার খুব কাছের একজন আমাকে কথায় কথায় বলত-আপনি আমাদের প্রতিষ্ঠানের এমনতর বিরুদ্ধবাদী কেন?মনে হয় উচিত জবাবের সময় চলে যাচ্ছে।
    এটা কোন ভাবেই শিক্ষার্থীদের দোষ নয়।তারা এইরকম শিক্ষা আর ফলাফল চায় না।অন্তত যাদের সাথে আমার পরিচয় আছে তাদের অধিকাংশই এই অবস্থাটা চাচ্ছেনা।এইটা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও সেই ফেইলুয়ার শিক্ষকদের অতি উৎসাহ যারা মনে করে পরীক্ষা হলে "লিফলেট" না দিলে আমার প্রতিষ্ঠান ভালো রেজাল্ট করবে না।এই সব অপকর্ম ভয় থেকে করে,তাদের সততা নেই বলে তারা অসৎ কাজে সাহস পায়।
    অবাক লাগে গার্ডিয়ানদের দেখে।
    তারা নিজেদের সন্তান এর প্রাইভেট টিউটর নিয়োগের জন্য কতো ধরনের শর্ত দেন।অমুক ভার্সিটির অমুক ডিপার্টমেন্টের হতে হবে,দিনে এত ঘণ্টা সপ্তাহে এত দিন মাসে এই টাকায় পড়াতে হবে।অথচ যখন তারা তাদের এই সন্তানদের জন্যই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা চিন্তা করেন তখন হট লিস্টে রাখেন এই সব চোর বাটপার প্রতিষ্ঠানের।সিরিয়াল ধরে ফরম টানেন।ভর্তি পরিক্ষায় না টিকলে আবার ডোনেশনের ব্যবস্থা করেন।আবার এরাই নিজেদের সন্তানের চুরির ফলাফলে মিষ্টি বিলান আর ড্যান্স পার্টি করেন।
    সময় আমাদের ও আসবে।একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন সত্যিকারের মেধাবিরা আজীবন দেখে তাদের স্বপ্ন বৃথা যাবেনা। হয়তো কোন সন্ধ্যায়ই উড়ো বাতাস পাবো পরিবর্তনের ডাকের।মিছিলের নেত্রিত্তে নয় এইবার মিছিলে শামিল থাকতে পারলেই টগবগিয়ে ফুটে উঠবো। মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশে ছুড়ে বলবো - আমিই মানুষ।

বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমি


ছবিটা প্রতীকী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানা মানুষের মনে নানা কথা জন্ম নেয়।আনন্দ-উৎসব,দুঃখ-কষ্ট,বিপদ-আপদ সহ নানা সংকটে পুরো দেশবাসীই তাকিয়ে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে।

ঢাকা ভার্সিটির গেইট নাই কেন? সীমানা প্রাচীরই বা কোথায়?এমন প্রশ্নের জবাবে রাজ্জাক স্যার বলেছিলেন-

সাগরে অনেক নদীই এসে মিশে।সাগরের না কোন গেট আছে না সীমানা আছে।জ্ঞান সাগরতো এমনই হওয়া উচিত

সারা বিশ্বের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগন যেখানে রাষ্ট্রের মূল উপাদান হিসেবে জনগন,নির্দিষ্ট ভূ-খণ্ড,সরকার ও সার্বভৌমত্ব কে নির্ধারণ করেছে সেখানে উপমহাদেশের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগন বাংলাদেশের মূল উপাদান হিসেবে এই চারটির সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও যোগ করেন।

যেখানে একটা দেশ কোন ভার্সিটি তৈরি করে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ নামে একটা দেশের জন্ম দিয়েছে।

এমন হাজারো কথা আর শ্রুতিমালা দেয়া যাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে।

কিন্তু এটাই সত্য কথা যে,চাইলেও আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ক্লাসরুমে বসে প্রিয় শিক্ষকদের কথা শুনতে পারব না।

চাইলেও কলাভবনের গোলক ধাঁধা পার হয়ে ৫ তলার এক্সাম হলে বসে পরীক্ষা দিতে পারব না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়!!! তুমি স্বমহিমায় তোমার জায়গায় দাড়িয়েই থাকবে।আর প্রতিনিয়ত বিদায় দেবে আমার মত কাউকে না কাউকে।

আমি আবেগে ভারাক্রান্ত নয়।আলহামদুলিল্লাহ্‌,সময়ের অনেক আগেই মাস্টার্স শেষ করে ফেললাম।এইবার শেষ ভালটা দেখার সময়।

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৪

সত্য পূরান ...


শান তার বন্ধু শিবলীকে নিয়ে সাগর পারে বেড়াতে এলো। শিবলী অনেকটা জোর করে নিয়ে এসেছে শানকে। দুইজন একটু নিরিবিলি জায়গা খুজে বসল। শান বন্ধুর মন একটু ভারি দেখে বলল কি বেপার এত নিরব কেন? শিবলী বলল তোমাকে আজ একটা স্বপ্নের কথা বলব। গত তিন দিন অনেক ভেবেছি স্বপ্ন নিয়ে। শান বলল স্বপ্ন নিয়ে ভাবনার কি আছে? আচ্ছা আগে শুনি।
শিবলীর কথা গুলিতার মুখ থেকে শুনুন।
কলেজে চাকরি করি, তাই সকালে ছুটতে হয়। রাত দশ টার পর জেগে থাকিনা। গত রবি বার কলেজে আনেক কাজ ছিল তাই প্রচন্ড পরিশ্রম এর কারনে, আর অবহেলায় এশার নামাজ পড়া হয়নি। মাঝ রাতেএকটা স্বপ্ন দেথে হটাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায়। স্বপ্নে যা দেখলাম তা হল, আমি শুয়ে আছি, হটাৎ দেখি একটা আলো বাইরে থেকে ছুটে আসছে আমার রুমের দিকে জানালা দিয়ে। আমি একটু ভয় পেলেও দেখতে লাগলাম। আলোটা আমার ঘরে ডুকে হটাৎ এক জন বয়স্ক মানুষের রুপ নিল। তার মুখে দাড়ি, মাথায় টুপি, পাঞ্জাবি পরা। আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম! লোকটা হটাৎ বলল নামাজ পড়, আর দুই বার বলল নামাজ পড়। তার পর বলল সময় কম। লোকটা ঘুরে চলে যেতে লাগল, আমি ডাক দিয়ে বললাম শুনুন, আপনি কে? লোকটি আবার ঘুরে একটু হাসল। তার পর বলল নামাজ পড় সময় কম। তার পর আলো হয়ে চলে গেল। কিছুহ্মন পর আমার মনে হল, আমি আকাশে উড়ে চলছি আর এ জন লোক আমার হাত ধরে আছে, লোকটির মুখের দিকে তাকাতেই দেখলাম ঐ লোকটা ! আমি কিছু বলব তখনই লোকটা হাত ইশারায় চুপ থাকতে বলল। আমরা উড়ে চলতে চলতে এক মরু ভুমিরমধ্যে এসে নামলাম । আমরা যেখানে নেমেছি সেখানে দেখলাম ভিশাল এক গুদাম ঘরের মত। আমরা ঘরের ভিতরে ডুকলাম, ভিতরে যা দেখলাম তাতে আমার আত্বা শুকিয়ে এলো! হাজার হাজার মৃত দেহ চারপাশে রাখা, হটাৎ দেখলাম ভিশাল বড় আকারের এক জন, ডান হাতে ভিশাল বড় দা নিয়ে বসে আছে। আর বাম হাত দিয়ে একটা করে লাশ টেনে আনছে, তারপর বড় দা দিয়ে আপেলের মত ছোট ছোট টুকরো করছে। ভয়ে আমার মুখ শুকিয়ে গেল, তখনই আমার সাথে থাকা বয়স্ক লোকটা আমার হাত ধরে টান দিয়ে আকাশের দিকে ছুটে চলল।
আনেক হ্মন উড়ে চলার পর, আমরা ভিশাল এক ফল ও ফুলের বাগানে এসে নামলাম। সুন্দর বাগান দেখে আমি লোকটার হাত ছেড়ে হাটা শুরু করলাম, কতহ্মন আমি হাটলাম মনে নেই। বাগান শেষ হয়না, এবার দেখলাম বাগানে অনেক বাংলো বাড়ি! আমি হেটে একটি বাড়ির কাছে এলাম, এত সুন্দর বাড়ি আমি জিবনে দেখিনি !কিন্তু বাড়িতে কোন লোকজন নেই! আবার হাটা দিলাম, কিছু দূর দূর বাড়ি বাগানে, মনে হল সবই খালি! আরো কিছু দুর এগিয়ে একটি ফুলের বাগানে কিছু সুর্দশ যুবককে দেখলাম। আমি তাদের কাছে এগিয়ে এলাম, তাদের ডাক দিলাম কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারনে যুবকেরা আমার ডাক শুনছে না, মনে হল তারা আমাকে দেখতেও পাচ্ছেনা। যুবক গুলো নিজেরা কথায় এবং ফুলের বাগান দেখায় ব্যস্ত। আমি আবার ডাক দিতেই আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।
শিবলী স্বপ্নের কথা শেষ করে চুপ করে রইল। শান একটু চিন্তা করে বলল বৃদ্ধ লোকটি নামাজের কথা বলে ছিল, সময় কম। মানে সময়মত পূর্ণ না করলে শাস্তি, আর পূর্ণ ও ভাল কাজ করলে পুরস্কার। শিবলী বলল হে ভাই, নামাজ পড়।

জীবনের এক্সিবিশানে

পার্কের বসে আছে শুভ্র আর হাসিন।শুভ্রের হাতে মোবাইল ।সে মোবাইলে প্রচন্ড মনোযোগ সহকারে SNAKE গেমটা খেলছে । আর গেমটি সে সাউন্ড অন করে খেলছে ।হাসিন খুব বিরক্ত হচ্ছে তাও না ।
কারন সে ব্যাপারটার সাথে অভ্যস্ত । মানুষের সহজাত স্বভাব হল একটা অস্বাভাবিক ঘটনা বার বার দেখলে সেটা স্বাভাবিক লাগে ।
হাসিন ফাইন আর্টসের স্টুডেন্ট । আঁকাআঁকি তার পড়ার বিষয় না মিশে আছে ক্রোমোজোমে ।
...
চুপচাপ বসে বসে একটা স্কেচ বানাতে শুরু করে হাসিন ।শুভের লম্বা আর এলোমেলো চুলগুলো সামনে এসে গেছে । খেলায় সে খুব চিন্তিত ও অন্যমনস্ক থাকায় স্কেচটা বেশ ভালো হয়েছে ।
পাশে রাখা প্যাকেটটা ধরে রাখে হাছিন।
অপেক্ষা করতে থাকে কখন শুভ্র এদিকে নজর দিবে ।
এক বছর আগেঃ
ছবির গ্যালারীতে একটা এক্সিবিশানে জীবনের আঁকা প্রথম ছবি দিয়েছিলো হাসিন।
ছবিটার নামঃ জল পরী ।
ছবিটায় একটা মেয়ে নদীর পানিতে হাত ডুবিয়ে বসে আছে ।
জলের প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে । মেয়েটার চোখে অবাক শূন্যতা ।
হঠ্যাত্‍ খেয়াল করলো একটা ছেলে আধাঘন্টা ধরে ছবিটা দেখছে । কাছে গিয়ে কারন জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে বের হলোঃ ছেলেটি ছবিটা নিয়ে গল্প লিখছে । অর্ধেক গল্পটা লেখা হয়ে গেছে ।
কিন্তু খানিকবাদে ছবিটা বিক্রি হয়ে যায় । ছেলেটা অসহায়ের মত চেয়ে থাকে ।
দেখেই খারাপ লাগে হাসিনের ।
হাসিন পরিস্হিতি হালকা করতে গিয়ে ফোন নাম্বার চেয়ে নেয় ।
আর বলে দেয় একটা ছবি এঁকে পাঠিয়ে দিবে ।
সেই থেকে শুরু । ছেলেটা ফোন দিতেই হাজির । পথে বিপথে ছবি আঁকার সঙ্গী ।
ইতিমধ্যে শুভ্র তার পাশে একটা প্যাকেট রেখেছেঃ
লেখাঃ
ভালোবাসার একবছর পূরণ উপলক্ষ্যে উপহার । খুলতেই বের হলো পেন্সিল ।
আর হাছিন ধরিয়ে দিলো স্কেচ আর একটা প্যাকেট ।
প্যাকেটে একটা নতুন গ্যালাক্সী নোট ।
ছেলেটা লিখতে ভালোবাসে বলেই কিনেছে ।
একটা ধন্যবাদও দেয় না শুভ্র । নোটে কিছু টাইপ করতে শুরু করে । কিন্তু হাছিন একটু রাগ করে আজকে । কত সুন্দর করে গুছিয়ে শাড়ি পড়েছে ।
আর উনি ?
হঠ্যাত্‍ শুভ্রের বন্ধুরা আসে ।হাতে একটা বড় চিত্রকর্ম । প্যাকেটে মোড়ানো ।
বুক কাঁপতে থাকে হাসিনের ।
পাগলটা কার ছবি আনলো ?
প্যাকেট খুলতেই হাছিন আনন্দে কেঁদে ফেলেঃ
জল পরী !
চিত্‍কার করে ওঠে ।
আমার জন্য এত দারুন একটা সারপ্রাইজ প্লান ? ওয়াও ।
শুভ্র ভাবলেশহীন কন্ঠে বলেঃ
ছবিটা আমার ঘরে লাগাবো । আর আমার বৌকে পাশে নিয়ে ছবিটা দেখবো ।
হাসিন এটা তোর জন্য তো না !
হাসিন খানিকটা রাগ করেই উঠে যেতে ধরে ।শুভ্র হাত ধরে বলেঃ
আমাকে বিয়ে করে ফেলতে পারিস । কি আর করা ছবিটার যত্ন তো আর একা নিতে পারবো না ।
তোকে বিয়ে করবো কেন ? ঝাঁঝিয়ে ওঠে হাছিন ।
শুভ্র হেসে বলেঃ
করবি তো বটেই ! কারন আমার গল্পের বইয়ের বানান আর প্রচ্ছদের ছবি তোকেই ঠিক করতেই হবে । এত খরচ করতে গেলে অন্য কাউকে তো বিয়ে করতে পারবো না । আমায় দ্বায়মুক্ত কর ।
হাছিনও হেসে ফেলে শুভ্রের কথায় । বলেঃ আপনি দেখি রসিকতাও করতে শিখে গেছেন ।
আচ্ছা দেখি কি করা যায় , কিন্তু বৌ বলে যদি পারিশ্রমিক না দাও , খুব মাইর দিবো বলে দিচ্ছি ।
তারপর ছবিটা শুভ্রের ঘরে লাগিয়ে একসাথে বাইরে বের হয় দুজন ।
রাত নেমেছে । ওরা গ্রামে যাচ্ছে । জোছনা দেখতে ।
হঠ্যাত্‍ শুভ্র বলেঃ তুই আমার জলপরী । তোকে আমি অনেক ভালোবাসি ।
গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে । কোলাহল থেমে যাচ্ছে । শুভ্রের কাঁধে মাথা রাখে হাসিন ।
কাঁপাকাঁপা হাতে শুভ্রও হাসিনকে ধরে রাখে ।
দুজনের জীবনে এত সুন্দর একটা জোছনা আগে আসেনি 

সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০১৪

"সবাই একরকম না।"



অনেক কষ্টে একটা বাসে উঠে তার থেকেও অনেক বেশি কষ্ট করে একটা সিট দখল করে যুদ্ধজয়ী রাজার মতো আশপাশে তাকাতেই দেখি সামনে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে।

দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল। কারণ এতো কষ্টে অর্জিত সিটও ছাড়তে ইচ্ছে হচ্ছিল না আবার একটা মেয়ে এভাবে কষ্ট করে দাড়িয়ে যাবে আর আমি আরাম করবো এটাও মেনে নিতে পারছিলাম না।

শেষ পর্যন্ত বাসের ভিড় দেখে মনে হলো ওনাকেই বসতে দেওয়া উচিত। কারণ উনি একজন মেয়ে আর স্বাভাবিকভাবেই তার কিছুটা সমস্যা হচ্ছিলো।...

তাই উঠে ওনাকে সিট ছেড়ে দিতেই উনি আস্তে করে ধন্যবাদ বলে বসে পড়লেন। কিছুদূর যেতেই পাশের সিটে বসা লোকটা নেমে যেতেই আরেকটা ছেলে বসতে যাচ্ছিল। আমি কিছুটা পিছনে দাড়িয়ে দেখছিলাম।

তখন হঠাৎ দেখি মেয়েটা ওই ছেলেটাকে বলল "ভাইয়া কিছু মনে করবেন না। আমার সাথে আরেকজন আছে। এখানে তাকে বসাতে চাচ্ছিলাম।"

যেহেতু মেয়েটা এতো ভদ্রভাবে বলেছে তাই ছেলেটাও ভালভাবেই উঠে গেল।

ছেলেটা উঠে যেতেই আমি প্রচন্ড অবাক হলাম। কারণ মেয়েটা আমাকেই ইশারায় বসতে বলছিল। আর অবাক হওয়ার কারণ হচ্ছে, এই পর্যন্ত অনেককেই সিট দিয়েছি কিন্তু কেউ কখনোই এইভাবে বসার ব্যাবস্থা করে দেয় নি।

এতোটাই অবাক হয়েছিলাম যে ওনাকে ধন্যবাদও দিতে পারি নি। তাই তাকে এখন ধন্যবাদ জানাচ্ছি (যদিও জানি না সে লেখাটা দেখবে কিনা তাও)।

মাঝে মাঝে অভিমান করে বলি মেয়ে সব খারাপ। কিন্তু আজকে বলতে ইচ্ছে করছে "সবাই একরকম না।"

বি.দ্র: অনেকেই জিজ্ঞেস করতে পারেন যে কেন আমি কোন বৃদ্ধকে বসতে না দিয়ে একটা মেয়েকেই বসতে দিলাম। তাদের জানাচ্ছি যে বাসে সেরকম বয়স্ক কোন লোক দাড়িয়ে ছিল না।

শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৩

মায়ের দিক হতে

আগেই আমি আমার পিতৃকুলের পরিচয় দিয়েছি।এইবার আমার মাতৃকুলের পরিচয় পর্বে আসি।

আমার নানাবাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ১৫ নং বড়কুল(প)ইউনিয়নের অন্তর্গত জাখনি গ্রামের খান বাড়ি।

আমার নানা মাওলানা সোলায়মান খান স্থানীয় ভাবে সবার নিকট আদর্শ শিক্ষক ও হুজুর হিসেবে পরিচিত।আশেপাশের ১০ গ্রামের মানুষ তাঁকে বিখ্যাত ওয়াজিন হিসেবে সম্মান করে।অনেক অসুস্থতার সাথে এখনো আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে আছেন।

আমার নানু গৃহ আবাদ করেই আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছেন।

মামারা ৫ ভাই ও ৫ বোন।আমার মা বোনদের মাঝে ৩য়।আমার অন্যান্য খালারা বেশ সুখের সাথেই ঘর-সংসার করছেন।

বড় মামা রফিক আহমেদ খান বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কর্মরত আছেন।

মেঝ মামা শরিফ আহমেদ খান ও সেঝ মামা মোহাম্মদ আজম খান উভয়েই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যথাক্রমে সায়েন্স ও আর্টসের শিক্ষক।

আমার চতুর্থ মামা ফয়েজ আহমেদ খান আমাদের বংশে একমাত্র প্রবাসী হিসেবে সৌদি আরবে কর্মরত আছেন।

আর ছোট মামা ফরিদ আহমেদ খান বেসরকারি ওষুধ কম্পানিতে চাকুরিরত।

পিতৃকুলে কেমন আমি?

আমি কে?কোথা হতে এসেছি?কি আমার পরিচয়?মানুষ কথায় বলে ব্যবহারে বংশের পরিচয়।আমি সরাসরিই দিলাম।প্রথমেই পিতৃকুল হতে শুরু করি।

আমার দাদার বাড়ি চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার ১৪ নং আস্রাফপুর ইউনিয়নের পূর্বদিকের সীমানা নিকটবর্তী এলাকা চাঙ্গিনি গ্রামে নয়া বাড়ি।বর্তমানে এটা চাঁদপুর-১ আসনের অন্তর্গত।
আমার দাদা মৃত মৌলভি আব্দুল লতিফ।তিনি স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে জড়িত ছিলেন।পাশাপাশি ইসলামের খেদ্মত ও ইসলাম সঠিক ভাবে প্রচার করার কারনে লোকজন তাঁকে দরবেশ বলে জানতেন এবং ডাকতেন।

দাদী আল্লাহর রহমতে এখনো বেঁচে আছেন।যদিও মাঝে মাঝে তার অসুস্থতা তাঁকে কাবু করে দেয়।শতবর্ষী হতে আর বেশি দিন বাকি নেই।

আমার বাবা-চাচা সব মিলিয়ে ৫ জন এবং ফুফু ৩ জন।সিরিয়াল অনুযায়ী তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিচ্ছি।
বাবার বড় যিনি আমরা তাঁকে জ্যাঠা বলে ডাকি।তিনি বর্তমানে উপজেলা খাদ্য অফিসে সিনিয়র ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত।


আমার বাবার পড়ে যিনি তার নাম প্রফেসর ড.আবদুল মালেক।তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়ার আরবি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক।

তারপর যিনি তার নাম প্রফেসর এ.কে.এম.আবদুল খালেক।তিনি বিক্রমপুর আদর্শ ডিগ্রি কলেজে কর্মরত।

আমার ছোট কাকার নাম এডভোকেট মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার।সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী হিসেবে আইন ব্যবসা করছেন।তিনি রাজউকের আইন পরামর্শকও।

এদের সবাই আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।


আর ফুফুরা সবাই তাদের পরিবারের সাথে সুখেই আছেন।